উজ্জ্বল কুমার সরকার, নওগাঁ প্রতিনিধি:
আজ ২১ মার্চ ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেত্রী রানী মুখার্জী (জন্ম মার্চ ২১, ১৯৭৮) এর শুভ জন্মদিন। তিনি ১৯৭৮ সালের ২১ মার্চ ভারতের মহারাষ্ট্রের মুম্বাই-এ জন্মগ্রহণ করেন। তিনি হলেন একজন ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেত্রী। তিনি ২০০০-এর দশকের বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় ও সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক গ্রহীতা অভিনেত্রী ছিলেন। কর্মজীবনে তিনি সাতটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার সহ একাধিক পুরস্কার লাভ করেছেন। মুখার্জি-সমর্থ পরিবারে জন্মগ্রহণ করলেও, যেখানে তার বাবা এবং আত্মীয়রা ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্পের সদস্য ছিলেন; সেখানে তিনি জীবিকা হিসেবে চলচ্চিত্রকে বেছে নেয়ার বিষয়ে উচ্চাভিলাষী ছিলেন না। যদিও, ছেলেবেলায়ই তিনি বাবার পরিচালিত বাংলা ভাষার চলচ্চিত্র বিয়ের ফুল (১৯৯৬) চলচ্চিত্রে সহ-চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে এবং পরবর্তীতে তার মায়ের সনির্বন্ধ অনুরোধে রাজা কি আয়েগি বারাত (১৯৯৭) সামাজিক নাট্য চলচ্চিত্রে মূখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেন। এরপর নিয়মিত হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন কুছ কুছ হোতা হ্যায় (১৯৯৮) চলচ্চিত্রে শাহরুখ খানের বিপরীতে একটি সহযোগী চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে। তার কর্মজীবনের এই প্রাথমিক সাফল্যের পর, পরবর্তী তিন বছরের জন্য তার চলচ্চিত্র বক্স অফিসে দুর্বল অবস্থানে ছিল। যশ রাজ ফিল্মসের সাথিয়া (২০০২) নাট্য চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পর তার কর্মজীবনের সাফল্য আসে।
তিনি তার পিতা রাম মুখার্জী একজন অবসরপ্রাপ্ত পরিচালক। তার মা কৃষ্ণা মুখার্জী চলচ্চিত্রে গান গাইতেন। তার ভাই রাজা মুখার্জী একজন চিত্র প্রযোজক। তার মাসি হলেন প্রখ্যাত চিত্রনায়িকা দেবশ্রী রায়। বলিউড তারকা অভিনেত্রী কাজল তার সম্পর্কিত বোন।তিনি বিখ্যাত পরিচালক প্রযোজক যশ চোপড়া এর বড় ছেলে পরিচালক ও প্রযোজক আদিত্য চোপড়াকে বিয়ে করেন। তার পরবর্তী দুটি ছবি গুলাম ও কুছ কুছ হোতা হ্যায় (১৯৯৮) ব্যবসাসফল হয়। শেষের ছবিটির জন্য তিনি তার প্রথম ফিল্মফেয়ার পুরস্কার পান শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয়ের জন্য। এরপর তিনি অনেক ছবি করেন যার অধিকাংশই ব্যবসা সফল হয় নি। তিনি শাদ আলি পরিচালিত সাথিয়া (২০০২) ছবিতে অভিনয় করেন। এই ছবিটি সমালোচক ও সাধারণ দর্শকদের কাছে তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
২০০৪ সালে হাম তুম ও যুবা ছবির অভিনয় তাকে ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী পুরস্কার ও ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ সহ-অভিনেত্রী পুরস্কার পাইয়ে দেয়। বীর-জারা ছবিতে সামাজিক কর্মী হিসেবে তার অভিনয় প্রশংসিত হয়ে ছিল এবং তিনি মনোনীত হয়েছিলেন।
২০০৫ সালে তিনি ৪টি বড় মাপের ছবিতে অভিনয় করেন।বান্টি অর বাবলি ছবিটি সাফল্য লাভ করে এবং অন্যান্য ছবিতে তার অভিনয় প্রশংসিত হয়। ব্ল্যাক ছবিটি এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য। রানী একজন সক্রিয় মঞ্চ অভিনেত্রী। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তিনি অনুষ্ঠান করেছেন। টেম্পটেশন ২০০৪ ছিল তার সফলতম কনসার্ট যেটি হয়েছিল শাহরুখ খান, সইফ আলি খান, প্রীতি জিনতা, অর্জুন রামপাল এবং প্রিয়াঙ্কা চোপড়া কে নিয়ে। মেলবোর্ন ২০০৬ কমনওয়েলথ গেমস এর সমাপনী অনুষ্ঠানেও তিনি অংশ নেন। অভিনয় ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে রানী মুখার্জী বিভিন্ন দাতব্য সংস্থার সাথে যুক্ত থেকেছেন। তার উল্লেখযোগ্য প্রদর্শনী হচ্ছে টেম্পটেশন ২০০৫ যা তিনি নয়া দিল্লী তে করেছিলেন। প্রতিবন্ধীদের জন্য অর্থ যোগানের উদ্দেশ্যেই এই শো করা হয়।
শাহরুখ খানও প্রিয়াংকা চোপড়াও এসময় তার সাথে অংশগ্রহণ করেছেন। বধির ও অন্ধদের সমন্বয়ে গড়া হেলেন কিলার ইনস্টিটিউটের ছাত্র-ছাত্রীর সঙ্গে তিনি ২০০৬ সালে তার জন্মদিন পালন করেন। ব্ল্যাক ছবিতে অভিনয়ের সময় তিনি এই ইনস্টিটিউটের সদস্যের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করেন। তিনি তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছিলেন তাদে ঐকান্তিক সাহায্য ছাড়া ব্ল্যাক ছবিতে তিনি অভিনয় করতে পারতেন না।
২০০৬ সালে তিনি জুহুতে তার নিজের একটি বাড়ী কিনেন। এই বাড়ীর ইন্টেরিয়র ডেকোরেশন করেন প্রখ্যাত অভিনেত্রী টুইংকেল খান্না যা শেষ হতে প্রায় এক বছর সময় লাগে।