মোল্লা জাহাঙ্গীর আলম, ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি:
খুলনা শহরের কাচা বাজারে পাইকারি বিক্রির জন্য বেগুন ও গাজর নিয়ে এসেছিলেন যশোরের কেশবপুর এলাকার কৃষক আলিম মেয়া। মঙ্গলবার ভোর রাত থেকে দুপুর পর্যন্ত বসে থেকেও ক্রেতা না পাওয়ায় তিনি ফিরে যাচ্ছিলেন। এ সময় দৈনিক তথ্য কে আলিম মেয়া বলেন, বেগুন পাইকারি ১৩ টাকা কেজি এবং গাজর ১১ টাকার বেশি কেউ দাম বলে না। তাই বাধ্য হয়ে ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। এগুলো গ্রামের হাটে খুচরা বিক্রি করব।
ছয় দিনের ব্যবধানে খুলনার বাজারে আলু ছাড়া অধিকাংশ শাকসবজির দাম কমেছে। এর পরও মিলছে না ক্রেতা। এতে বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। জানা গেছে, রোজা শুরুর আগের দিন সোমবার রাজাবাজার ও সোনাডাঙ্গা পাইকারি বাজারে ৪০ টাকা কেজি দরের বেগুনের দাম ওঠে ৭০ টাকায়।
৫০ টাকার শিম বিক্রি হয় ৮০ টাকায়। এভাবে টমেটো, গাজর, খিরাই, শসা ও লেবুসহ প্রায় সব ধরনের শাকসবজি দ্বিগুণ দামে বিক্রি হয়। মাত্র ছয় দিনের ব্যবধানে মঙ্গলবার বেগুনের দর খুচরা বাজারে কেজিপ্রতি ২০ টাকায় নামে। অন্য শাকসবজির দামও নেমেছে অর্ধেকে।
এদিকে রোজার আগের দিন থেকে শিম ৮০, গাজর ৪০, টমেটো ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। লেবুর হালি ছিল সর্বনিম্ন ৭০ টাকা। শসার কেজি ১০০ টাকা, খিরা ৮০ টাকা। মঙ্গলবার বাজার ঘুরে দেখা যায়, শিমের দাম চাওয়া হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা, গাজর ১১ টাকা ও টমেটো ১৫ টাকা, শসা ও খিরা ৪০ টাকা। লেবুর হালি ২০-২৫ টাকা।
রাজাবাজারের ব্যবসায়ী আবিদ আলী বলেন, গত শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সব ধরনের শাকসবজির দাম চড়া ছিল। সোমবার রাত থেকে ধস নামে। ১০০ টাকা কেজির বেগুন ২০ টাকা হলেও ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। দাম কমার বিষয়ে তিনি বলেন, আমদানি বেশি। সেই তুলনায় ক্রেতা নেই। এ কারণে কম দামেও পণ্য বিক্রি করা যাচ্ছে না।
দেশি নতুন পেঁয়াজের কেজি ছিল ৯০ টাকা। মঙ্গলবার রাত থেকে সেই পেঁয়াজ ৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে আলুর দাম কেজিতে ছয় টাকা বেড়ে ৩৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁচামরিচের দাম কমেছে অর্ধেক। রোজার এক দিন আগে ৪০ টাকা বেড়ে বিক্রি হয় ৮০ টাকা কেজি দরে। গতকাল আবার আগের দামেই কাঁচামরিচ বিক্রি হয়।
নাইম ফরাজি বাজারের ব্যবসায়ী আসাদ ইসলাম বলেন, আলুর দাম তিন দিন আগেও কেজিপ্রতি ৩০ টাকা ছিল।মঙ্গলবার ৩৬ টাকায় বিক্রি হয়। মাঠে কৃষকের ক্ষেতে আলু নেই। এ কারণে সরবরাহ কমায় দাম বাড়ছে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন কৃষি বিপণন বটিয়াঘাটা উপজেলায় মাঠ ও বাজার পরিদর্শক রাতুল রাহুল বলেন, বেগুন, শিম, খিরা, শসা ও লেবুর দাম যেভাবে বেড়েছিল সেভাবেই কমেছে। বাজারে সরবরাহের তুলনায় ক্রেতা না থাকায় দাম কমেছে।